শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্‌’

‘ধৃ’ ধাতুর উত্তর ‘মন্‌’ প্রত্যয় করে ‘ধর্ম’ শব্দের উৎপত্তি। ধর্ম মানে যা ধারণ করে থাকে বা যাকে ধারণ করে রাখা হয়। যেমন অগ্নি— অগ্নির ধর্ম দহন করা। প্রতিটি সত্তার ‘ধর্ম’ আছে আর তার দ্বারাই তার অস্তিত্ত্ব সূচিত হয়, অস্তিত্ত্ব নির্ধারিত হয়। সে যদি ধর্মচ্যুত হয় তাহলে তার নামরূপও পাল্টাতে হয়। যেমন, আগুন যদি পোড়াবার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে তবে সে আর আগুন থাকে না, তাকে আগুন বলে ডাকব না। সে যে কাজটা করছে তা-ই বলে ডাকব। আগুন যদি না পুড়িয়ে ভেজায় তখন তাকে লোকে জল বলবে— আগুন বলবে না।


সব বস্তুরই একটা নির্দিষ্ট ধর্ম আছে। তাই মানুষকে কোন কিছু করতে গেলে— সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সাধনা বা জীবনে আর সব কিছুই— ধর্মসম্মত ভাবে করতে হবে কারণ ধর্ম হ’ল বিধাতা নির্দিষ্ট ব্যবস্থা। হাতি— তার চেহারাটা এক বিশেষ ধরনের। তার স্নান সে চেহারা অনুযায়ী করবে। শুঁড়ে করে জল টেনে স্নান করবে, হাতে করে জল নিয়ে স্নান করবে না। তেমনি মানুষকেও ধর্ম্মসম্মত ভাবেই সমস্ত কাজ করতে হবে। আর যেহেতু ধর্ম বিধাতা নির্দিষ্ট ব্যবস্থা, তাই মানুষ যে কাজটা ধর্মসম্মতভাবে করবে সেটা তার পক্ষে কল্যাণকর হবে। তাতে তার জয় হবে, তাতে তার কল্যাণ হবে।
আর এই স্বভাবের, এই ধর্মসম্মত স্বভাবের যে বিরোধিতা করবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। যেমন ঈশ্বরোপাসনা মানুষের ধর্মসম্মত ব্যবস্থা, মাথা তুলে বেঁচে থাকার অধিকার মানুষের ধর্মসম্মত ব্যবস্থা। মানুষের এই ধরনের যে কোন ধর্মসম্মত ব্যবস্থাতে কেউ যদি বাধা দেয়, বিরোধিতা করে, তাকে ধ্বংস হতে হবে। তোমাদের ধর্ম্মসম্মত সাধনার বিশেষ ক্রম রয়েছে, সাধনার বিশেষ বিধি রয়েছে। কোন মানুষ বা কোন গোষ্ঠী, কোন দল— তিনি বা তাঁরা যত শক্তিশালী বা শক্তিশালিনী হোন না কেন— যদি তাকে দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করেন বা করে থাকেন, তবে তাঁদের ধ্বংস হতেই হবে। ইতিহাস তা-ই দেখেছে, তাঁদের ধ্বংস হতে হয়েছে কারণ ধর্মের বিরোধিতা করে কেউ কখনো জয়ী হয়নি, হয় না, হবেও না। তাই তোমরা যখন নিজেদের শক্তিতে চলবে, দৃঢ় পদবিক্ষেপে চলবে, মাথা উঁচু করে চলবে, কারণ জেনে রেখো, ধর্ম যখন তোমাদের সঙ্গে রয়েছে, যে তোমাদের বিরুদ্ধে যাবে তাকে মাটিতে মিশে যেতে হবে, তার পতন অনিবার্য।
মানুষ যদি সব সময় এই কথাটা মনে রাখে যে, আমাকে যে যাই বলুক না কেন, যত গালিই দিক না কেন, লোকের চোখে আমি যত ছোট, যত মূর্খ, যত গরীবই হই না কেন, আমি তো পরমপুরুষের বিস্তারিত দেহের একটা টুকরো মাত্র, তখন তার মধ্যে আর কোন গ্লানিই থাকে না, থাকতে পারে না। মানুষ হ’ল অসম্পূর্ণ পরমপুরুষ সম্পূর্ণ। তাই মানুষের মধ্যে ত্রুটি থাকবেই। সে যত পরমপুরুষের বিরাট ভাবের দিকে এগিয়ে যাবে ততই সে ত্রুটিমুক্ত হতে থাকবে, আর যখন সে সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত হবে, তখন দেখা যাবে, সে পরমপুরুষের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে, আর সে আলাদা নেই।

শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্‌’ 



আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।

পুণঃপ্রচারে বিণীত
      প্রণয় সেন
Share on Google Plus

About Indian Monk - Pronay Sen

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.

0 comments :

Post a Comment