শুক্তির ন্যায় হও। ভারতবর্ষে একটি সুন্দর কিংবদন্তী প্রচলিত আছে ---- "আকাশে যখন স্বাতীনক্ষত্র ওঠে, তখন যদি বৃষ্টি হয় এবং ঐ বৃষ্টিজলের এক বিন্দু যদি কোন শুক্তির উপর পড়ে, তা হলে সেটি একটি মুক্তারূপে পরিণত হয়। শুক্তিগুলি এটা জানে; সুতরাং ঐ নক্ষত্র আকাশে উঠলে তারা জলের উপর এসে ঐ সময়কার একবিন্দু মহামূল্য বৃষ্টিকণার জন্য অপেক্ষা করে। যেই একবিন্দু বৃষ্টি তার উপর পড়ে, অমনি ঐ জলকণা নিজের ভিতর নিয়ে শুক্তি মুখ বন্ধ করে দেয় এবং একেবারে সমুদ্রের নিচে চলে যায়; সেখানে সহিষ্ণুতাসহকারে বৃষ্টিবিন্দুকে মুক্তায় পরিণত করবার সাধনায় মগ্ন হয়।"
আমাদেরও ঐরূপ করতে হবে। প্রথমে শুনতে হবে, পরে বুঝতে হবে, পরিশেষে বহির্জগতের প্রভাব ও সর্বপ্রকার বিক্ষেপের কারণ হতে দূরে থেকে আমাদের অন্তর্নিহিত সত্যকে বিকাশ করবার জন্য যত্নবান হতে হবে। শুধু নূতনত্বের জন্য একটি ভাব গ্রহণ করে আর একটি নূতন ভাব পেলে তা ছেড়ে দেওয়া ----এইরূপ বারংবার করলে আমাদের শক্তি বৃথা ক্ষয় হয়ে যাবে। সাধনকালে এইরূপ বিপদের আশঙ্কা আছে। একটি ভাব গ্রহণ কর, সেটি নিয়েই সাধনা কর ; এর শেষ পর্যন্ত দেখ, শেষ না দেখে ছেড়ো না। যিনি একটি ভাব নিয়ে পাগল হয়ে যেতে পারেন, তিনি সত্যের আলো দেখতে পান। আর যারা এখানে একটু, ওখানে একটু আস্বাদ করে বেড়ান, তারা কখনই কোন বস্তু লাভ করতে পারে না। কিছুক্ষণের জন্য তাদের স্নায়ু একটু উত্তেজিত হতে পারে বটে, কিন্তু ঐখানেই শেষ। তারা চিরকাল প্রকৃতির দাস হয়ে থাকবে, কখনই ইন্দ্রিয়কে অতিক্রম করতে পারবে না।
যারা যথার্থই যোগী হতে ইচ্ছা করেন, তাহাদের এইরূপ প্রত্যেক বিষয় একটু একটু করে আস্বাদ করার ভাব একেবারে ত্যাগ করতে হবে। একটি ভাব নিয়ে তাকেই জীবনের একমাত্র ব্রত কর,
শয়নে স্বপনে নিদ্রা জাগরণে সর্বদাই এই ভাবের চিন্তা করতে থাক। ঐ ভাব অনুযায়ী জীবনযাপন কর। তোমার মস্তিষ্ক, স্নায়ু, পেশী, শরীরের প্রতিটি অঙ্গ এইভাবে পূর্ণ হয়ে যাক। অন্য সমুদয় চিন্তা দূরে থাকুক। এটাই সিদ্ধিলাভের উপায় ;
এই উপায়েই বড় বড় ধর্মবীরের উদ্ভব হয়েছে। বাদবাকি সকলে তো শুধু কথা কওয়ার যন্ত্রমাত্র। যদি আমরা নিজেরা সত্যই কৃতার্থ হতে চাই ও অপরের জীবন ধন্য করতে ইচ্ছা করি, তাহলে আমাদেরকে আরও গভীরে প্রবেশ করতে হবে। এটা কার্যে পরিণত করবার প্রথম সোপান ----- মনকে কোনমতে বিক্ষিপ্ত না করা এবং যাদের সঙ্গে কথা বললে মনের চঞ্চলতা আসে, তাদের সাথে মেলামেশা না করা। সর্বপ্রকার তর্ক ও যাতে মনের বিক্ষেপ হয়, সেসব পরিত্যাগ কর। শুষ্ক তর্কে কি ফল?
এগুলো কেবল সম্যভাব নষ্ট করে দিয়ে মনকে চঞ্চল করে তোলে। সূক্ষ্মস্তরের তত্ত্ব উপলব্ধি করতে হবে। কথায় কি সেটা হবে? অতএব সর্বপ্রকার বৃথা বাক্য ত্যাগ কর। যাঁরা প্রত্যক্ষ অনুভব করেছেন, কেবল তাঁদের লেখা গ্রন্থাবলী পাঠ কর।
তোমরা সকলেই জান যে, কতকগুলো স্থান, কোন কোন ব্যক্তি ও খাদ্য তোমাদের নিকট বিরক্তিকর। ঐগুলো এড়িয়ে চলবে।
যারা সর্বোচ্চ অবস্থা লাভ করতে চায়, তাদেরকে সৎ অসৎ সর্বপ্রকার সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।
খুব দৃঢ়ভাবে সাধনা কর। মর বা বাঁচ ------ কিছুই গ্রাহ্য করো না। ফলাফলের দিকে লক্ষ্য না করে
সাধন - সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে হবে। যদি খুব নির্ভীক হও, তবে ছয় মাসের মধ্যেই তুমি একজন সিদ্ধ যোগী হতে পারবে। কিন্তু যারা অল্পস্বল্প সাধনা করে, সব বিষয়েই একটু আধটু চাখে, তারা কোনই উন্নতি করতে পারে না। কেবল উপদেশ শুনলে কোন ফল হয় না। যারা তমোগুণের পূর্ণ, অজ্ঞান ও অলস, যাদের মন কোন একটি বিষয়ে কখনো স্থির হয় না, যারা একটু আমোদের জন্য কোন কিছু চায়, তাদের পক্ষে ধর্ম ও দর্শন চিত্তবিনোদনেরই উপাদান। এরা সাধনে অধ্যবসায়হীন। তারা ধর্মকথা শুনিয়া মনে করে, বাঃ এ তো বেশ! তারপর বাড়ি গিয়ে সব ভুলে যায়। সাফল্য লাভ করতে হলে প্রবল অধ্যাবসায়, প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকা চাই। অধ্যবসায়শীল সাধক বলেন,
'আমি গণ্ডূষে সমুদ্র পান করিব।
আমার ইচ্ছেমাত্রে পর্বত চূর্ণ হইয়া যাইবে।'
এইরূপ তেজ, এইরূপ সঙ্কল্প আশ্রয় করে খুব দৃঢ়ভাবে সাধনা কর। নিশ্চয়ই লক্ষ্যে উপনীত হবে।
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নূতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নূতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নূতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত -
প্রণয় সেন
প্রণয় সেন
0 comments :
Post a Comment