‘ধ্যান ও প্রার্থনা’

পৃথিবীর অগণিত মানুষ রাম, কৃষ্ণ, কালী, যীশু, রামকৃষ্ণ প্রভৃতি দেবদেবী বা অবতারের নাম জপ করে। গুরু-প্রদর্শিত পথে জপ-ধ্যান করা অবশ্যই কর্তব্য। অনেকে দীক্ষা গ্রহণ করে প্রত্যহ নির্দিষ্ট সংখ্যক জপ করে মনে মনে ভাবে— যথেষ্ট। তন্ত্রশাস্ত্রে মন্ত্রকে চৈতন্যময় করবার নানাবিধ সাধন আছে। শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁর অধিকাংশ শিষ্যগণ ঐ সব সাধন করেছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ যখন দক্ষিণেশ্বরে পূজাকালে ‘রং’ মন্ত্র উচ্চারণ করে বহ্নিপ্রাকার চিন্তা করতেন, তখন দেখতেন তাঁর চতুর্দিকে শত জিহ্বা বিস্তার করে অগ্নির প্রাচীর তাঁকে সর্বতোভাবে রক্ষা করছে। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর মন্ত্রকে উজ্জ্বল স্বর্ণাক্ষরে লেখা দেখতে পেতেন। অথচ আমরা চোখ বুজে ধ্যান-জপ করি আর চারিদিকে অন্ধকার দেখি। কখনো মনে হতাশ ভাবও আসে। তাই গুরুর কাছ থেকে মন্ত্রচৈতন্যের প্রক্রিয়া জেনে নিয়ে সাধন করলে জপ-ধ্যানে আস্বাদ পাওয়া যায়। স্বামী বিবেকানন্দ মন্ত্রচৈতন্য প্রসঙ্গে বলেছেন: “মন্ত্রবাদের সমর্থকদের বিশ্বাস— কতকগুলি শব্দ গুরু বা শিষ্যপরম্পরায় চলে এসেছে। এই সকল শব্দের বারবার উচ্চারণে ও জপে একপ্রকার উপলব্ধি হয়। ‘মন্ত্রচৈতন্য’ শব্দের দু-রকম অর্থ করা হয়। এক মতে— মন্ত্র জপ করতে করতে জাপকের সামনে তার ইষ্টদেবতার আবির্ভাব হয়। ‘ইষ্ট’ হচ্ছেন মন্ত্রের বিষয় বা মন্ত্রের দেবতা। আর একটি মত এই: যে গুরুর উপযুক্ত শক্তি নেই, তাঁর কাছে মন্ত্র-দীক্ষা নিলে— সেই মন্ত্রে চেতনা সঞ্চার করতে হলে দীক্ষিতকে কতকগুলি অনুষ্ঠান (পুরশ্চরণাদি) করতে হয়, তখন সেই মন্ত্র-জপের ফল পাওয়া যায়।”
মন্ত্রচৈতন্য কি? এর উত্তরে বলা হয়েছে: “সব মন্ত্রই হচ্ছে বর্ণের সমষ্টি। বর্ণের সমষ্টি হচ্ছে পদ। যে-পদের শক্তি থাকে, তাই সার্থক, নইলে শক্তিহীন পদ নিরর্থক।


 এই শক্তিজ্ঞান গুরুর নিকট হতে লাভ হয়। এই শক্তিজ্ঞান লাভ হলে, তখন মন্ত্রোচ্চারণ করলে সেই জ্ঞানের স্মরণ হয়। তখন মন্ত্র-প্রতিপাদ্য বস্তুর জাগরণ ঘটে। এরই নাম মন্ত্রচৈতন্য সাধন। যেমন ‘গো’ পদ শ্রবণ করলে তখন পূর্বদৃষ্ট গো সকলের স্মরণ হয় এবং তারপর ‘গো’ পদের অর্থজ্ঞান হয়। কিন্তু গো পদের দ্বারা সে গো-পদার্থকে বোঝায় শিশুকে তা তার বাপ-মার কাছ থেকে শিখতে হয় এবং পুনঃপুনঃ অভ্যাসের দ্বারা ‘গো’ এই ধ্বনি শ্রবণমাত্র পূর্বজ্ঞানের স্মরণ হয় এবং পরে গো-পদার্থের শাব্দবোধ হয়। সেইরূপ মন্ত্রের প্রতিপাদ্য বস্তু গুরুর কাছ থেকে শুনতে হয়। কিন্তু একবার শুনলেই যে বোঝা যায়, তা নয়, কারণ সাধারণতঃ আমাদের বুদ্ধি মলিন। সেইজন্য পুনঃপুনঃ শ্রবণ অভ্যাস করতে হয়। ...পুনঃপুনঃ শুদ্ধ শাব্দবোধের স্মরণ করতে করতে চিত্ত বিশুদ্ধ জ্ঞানাত্মক হয়ে যায়। এরই নাম মন্ত্রচৈতন্য।”

উদ্বোধন কার্যালয় সংকলিত ‘ধ্যান ও প্রার্থনা’ 
              ভারতের সাধক ও সাধিকা


আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নূতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নূতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।

ভারতের সাধক ও সাধিকা
      পুণঃপ্রচারে বিনীত 
            প্রণয় সেন
                প্রণয়
Share on Google Plus

About Indian Monk - Pronay Sen

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.

0 comments :

Post a Comment