যোগ বস্তুটা কী? যোগের ঠিক ঠিক অর্থটাই বা কী? দু’চারটা আসন শিখিয়ে দিয়ে কাউকে যোগী বানানো যায় না। যোগ হ’ল “সংযোগো যোগ ইত্যুক্তো জীবাত্মা-পরমাত্মনঃ।” এক্ষেত্রে সবচেয়ে মূল কথাটা হলো জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার সংযোগ অর্থাৎ এই দুই সত্তার মধ্যে চরম একাত্মতা স্থাপন যার ফলে জীবাত্মার আর পৃথক অস্তিত্ব থাকে না। চিনি আর লবনের মিশ্রণে যে যোগটা হ’ল আধ্যাত্মিক যোগ তা নয়। বরং চিনি আর জলের মিশ্রণে যেমন সরবৎ তৈরী হয়, দু’য়ে মিলে যেমন এক হয়ে যায় আধ্যাত্মিক যোগটা ঠিক সেই ধরনের জিনিস। সরবতে চিনির পৃথক অস্তিত্ব বোঝা যায় না। এটা কেবল addition-ই নয়, এটা হ’ল unification।
এ প্রসঙ্গে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে যোগটা হবে জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে অর্থাৎ যোগ হ’ল আস্তিকের জন্যে, নাস্তিকের জন্যে নয়। যে মানুষ নাস্তিক্যবাদের দ্বারা প্রেষিত হয়ে জগতের কাজ করে যোগ তার জন্যে নয়। নাস্তিক ছোট-বড়, ভাল-মন্দ, পারিবারিক-সামাজিক অথবা রাষ্ট্রনৈতিক—সে যে কাজই করুক না কেন তার জীবন দর্শন নাস্তিক্যবাদের ওপরে আধারিত। সে মানুষ যোগের অনুশীলন করতে পারে না। কারণ হ’ল, “সংযোগো যোগ ইত্যুক্তো জীবাত্মা-পরমাত্মনঃ” এই সূত্রানুসারে মানুষকে জীবাত্মা আর পরমাত্মা— এই দুই সত্তাকে তো মানতেই হবে। তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এই যে যোগ সাধনা কেবল আস্তিকের পক্ষেই সম্ভব।
এখন আস্তিক কাকে বলবো? প্রাচীনকালে আস্তিক বলতে বোঝাতো, যে মানুষ জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ—এই তিনটিকে মানে। পরবর্তী বৌদ্ধযুগে আস্তিক শব্দের ব্যাখ্যাটায় কিছুটা পরিবর্তন এসে যায়। পরিবর্তিত ব্যাখ্যায় বলা হ’ল, যে ব্যাষ্টি জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ—এই তিনের কোনো একটিকে মানে সে আস্তিক। বেদ বলতে বোঝায় যথার্থ জ্ঞান, সত্যিকারের জ্ঞান! বেদ বলতে কোনো বিশেষ পুস্তককে বোঝায় না। বেদ বলতে বোঝায় পারমার্থিক জ্ঞান, আধ্যাত্মিক জ্ঞান। এটাই বেদ শব্দের খাঁটি অর্থ। ধরো, কোথাও বলা হয়েছে মানুষ কীভাবে চুরি করবে, কীভাবে ডাকাতি করবে—এটাও তো এক ধরনের জ্ঞান। তবে এই ধরনের জ্ঞানকে বেদ বলা যাবে না।
সর্বাগ্রে প্রয়োজন আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বলবো যে জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ এই তিনকেই যে মানে সে হ’ল আস্তিক। যোগ শব্দের এইটিই হ’ল ঠিক ব্যাখ্যা। বৌদ্ধযুগের ব্যাখ্যায় যে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিলো সেটা মোটেই উচিত কাজ হয়নি। যে জীবাত্মাকে মানে কিন্তু পরমাত্মা বা বেদকে মানে না তার আধ্যাত্মিক প্রগতি কীভাবে হবে? জীবাত্মা কোন্ দিকে যাবেন? আমরা যখন আধ্যাত্মিক প্রগতির কথা বলবো তখন জীবাত্মা কোন্ পক্ষে যাবেন? কারণ পরমাত্মা সম্পর্কে কিছু বলা যদি নাই হয়ে থাকে [সেক্ষেত্রে কী হবে?]। ঠিক তেমনি যদি কেউ পরমাত্মাকে মানে কিন্তু জীবাত্মাকে না মানে তাহলে তো জৈবী অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। আর যেখানে জীবই নেই সেখানে প্রগতির কথা ওঠে কী করে? তাই যোগীর পক্ষে জীবাত্মাকেও অবশ্যই মানতে হবে। জীবাত্মা আর পরমাত্মার পক্ষে সম্পর্ক নির্দ্ধারণের কাজটা করবে কে?—না, আধ্যাত্মিক জ্ঞান। তাই আধ্যাত্মিক জ্ঞানকেও অবশ্য অবশ্যই মানতে হবে। কারণ আধ্যাত্মিক জ্ঞান না থাকলে মানুষ এগিয়ে চলবে কী করে? জীবাত্মার পরমাত্মার দিকে অগ্রগতি হবেই বা কী করে? তাই আস্তিক তাকেই বলবো যে জীবাত্মা মানে, পরমাত্মা মানে, বেদ মানে।
শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্’(১০, ১১, ১২, ১৩ খণ্ড)
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত
প্রণয় সেন
প্রণয়
এ প্রসঙ্গে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে যোগটা হবে জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে অর্থাৎ যোগ হ’ল আস্তিকের জন্যে, নাস্তিকের জন্যে নয়। যে মানুষ নাস্তিক্যবাদের দ্বারা প্রেষিত হয়ে জগতের কাজ করে যোগ তার জন্যে নয়। নাস্তিক ছোট-বড়, ভাল-মন্দ, পারিবারিক-সামাজিক অথবা রাষ্ট্রনৈতিক—সে যে কাজই করুক না কেন তার জীবন দর্শন নাস্তিক্যবাদের ওপরে আধারিত। সে মানুষ যোগের অনুশীলন করতে পারে না। কারণ হ’ল, “সংযোগো যোগ ইত্যুক্তো জীবাত্মা-পরমাত্মনঃ” এই সূত্রানুসারে মানুষকে জীবাত্মা আর পরমাত্মা— এই দুই সত্তাকে তো মানতেই হবে। তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এই যে যোগ সাধনা কেবল আস্তিকের পক্ষেই সম্ভব।
এখন আস্তিক কাকে বলবো? প্রাচীনকালে আস্তিক বলতে বোঝাতো, যে মানুষ জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ—এই তিনটিকে মানে। পরবর্তী বৌদ্ধযুগে আস্তিক শব্দের ব্যাখ্যাটায় কিছুটা পরিবর্তন এসে যায়। পরিবর্তিত ব্যাখ্যায় বলা হ’ল, যে ব্যাষ্টি জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ—এই তিনের কোনো একটিকে মানে সে আস্তিক। বেদ বলতে বোঝায় যথার্থ জ্ঞান, সত্যিকারের জ্ঞান! বেদ বলতে কোনো বিশেষ পুস্তককে বোঝায় না। বেদ বলতে বোঝায় পারমার্থিক জ্ঞান, আধ্যাত্মিক জ্ঞান। এটাই বেদ শব্দের খাঁটি অর্থ। ধরো, কোথাও বলা হয়েছে মানুষ কীভাবে চুরি করবে, কীভাবে ডাকাতি করবে—এটাও তো এক ধরনের জ্ঞান। তবে এই ধরনের জ্ঞানকে বেদ বলা যাবে না।
সর্বাগ্রে প্রয়োজন আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বলবো যে জীবাত্মা, পরমাত্মা ও বেদ এই তিনকেই যে মানে সে হ’ল আস্তিক। যোগ শব্দের এইটিই হ’ল ঠিক ব্যাখ্যা। বৌদ্ধযুগের ব্যাখ্যায় যে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিলো সেটা মোটেই উচিত কাজ হয়নি। যে জীবাত্মাকে মানে কিন্তু পরমাত্মা বা বেদকে মানে না তার আধ্যাত্মিক প্রগতি কীভাবে হবে? জীবাত্মা কোন্ দিকে যাবেন? আমরা যখন আধ্যাত্মিক প্রগতির কথা বলবো তখন জীবাত্মা কোন্ পক্ষে যাবেন? কারণ পরমাত্মা সম্পর্কে কিছু বলা যদি নাই হয়ে থাকে [সেক্ষেত্রে কী হবে?]। ঠিক তেমনি যদি কেউ পরমাত্মাকে মানে কিন্তু জীবাত্মাকে না মানে তাহলে তো জৈবী অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। আর যেখানে জীবই নেই সেখানে প্রগতির কথা ওঠে কী করে? তাই যোগীর পক্ষে জীবাত্মাকেও অবশ্যই মানতে হবে। জীবাত্মা আর পরমাত্মার পক্ষে সম্পর্ক নির্দ্ধারণের কাজটা করবে কে?—না, আধ্যাত্মিক জ্ঞান। তাই আধ্যাত্মিক জ্ঞানকেও অবশ্য অবশ্যই মানতে হবে। কারণ আধ্যাত্মিক জ্ঞান না থাকলে মানুষ এগিয়ে চলবে কী করে? জীবাত্মার পরমাত্মার দিকে অগ্রগতি হবেই বা কী করে? তাই আস্তিক তাকেই বলবো যে জীবাত্মা মানে, পরমাত্মা মানে, বেদ মানে।
শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্’(১০, ১১, ১২, ১৩ খণ্ড)
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত
প্রণয় সেন
প্রণয়
0 comments :
Post a Comment