বারদীনিবাসী লোকে এমনকি বয়স্কগণও—কী ব্রাহ্মণ কী অব্রাহ্মণ—সকলেই এ পর্যন্ত লোকনাথকে অপবিত্র, নীচ জাতি ও বিকৃতমস্তিষ্ক ভাবিয়া উপেক্ষা করিত। হঠাৎ একদিন তাহাদের ভুল ভাঙিয়া গেল। বারদী গ্রামের দুই তিন জন ব্রাহ্মণ একদিন একত্র বসিয়া পৈতা গ্রন্থি দেওয়ার চেষ্টা করিতেছেন; কিন্তু সুতায় পাক লাগিয়া যাওয়ায় তাঁহারা বড়ো অসুবিধায় পড়িয়া গেলেন, এমন সময় অস্পৃশ্য এই পাগল যদৃচ্ছাক্রমে সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং তাঁহাকে নিকটে দেখামাত্রই ব্রাহ্মণেরা ক্ষেপিয়া উঠিলেন এবং ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া বলিতে লাগিলেন, “এই, এদিকে আসিস না, খবরদার! আমরা পৈতা গ্রন্থি দিতেছি, আমাদিগকে ছুঁইস না।”
ব্রাহ্মণদের এই হুমকিতে মহাপুরুষ লোকনাথ ঈষৎ হাসিভাব দেখাইলেন এবং বলিলেন, “কেন, আমি ছুঁলে কি তোমাদের জাতি যাবে নাকি?”
ব্রাহ্মণেরা পাগলের এই আস্পর্ধা দেখিয়া ক্রুদ্ধ হইলেন এবং তাহাদের মধ্যে একজন বলিলেন, “জাতি যাবে না তো কী? তুই কী জাত না কী জাত তা কে জানে?” অবস্থা চরমে উঠিল। এবার প্রতিক্রিয়া। মহাপুরুষ ব্রাহ্মণদের জাতির বড়াই দেখিয়া হাসিলেন এবং মৃদুস্বরে বলিলেন, “তোমরা কোন্ গোত্র?” পাগলের মুখে এই অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে ব্রাহ্মণগণ অপ্রতিভ হইয়া একে অন্যের মুখের দিকে তাকাইতে লাগিলেন এবং ইহাদের অন্যতম সুর নামাইয়া উত্তর করিলেন, “আমরা কাশ্যপ গোত্র।”
ব্রহ্মচারী বাবা এবার বলিতে লাগিলেন, “কাশ্যপ-অবসর-নৈ–ধ্রুব-প্রবর।” যাঁহাকে কিছুক্ষণ পূর্বে সমাজের অস্পৃশ্য নীচ বা অনার্য জাতি-সম্ভূত ভাবিয়া ব্রাহ্মণগণ নিজদিগকে বর্ণশ্রেষ্ঠ বলিয়া গর্ব প্রকাশ করিতেছিলেন, সেই হীন ও পতিতের মুখে নিজেদের গোত্র-পতিতের নাম শুনিয়া তাঁহারা চমকিয়া উঠিলেন। মহাপুরুষ লোকনাথ তাঁহাদের তখনকার ভাব দেখিয়া আরও বলিতে লাগিলেন, “কী থামলে কেন? গ্রন্থি দাও না?”
পাগলের এই উক্তিতে তাঁহাদের চৈতন্যোদয় হইল,—আগন্তুক নিশ্চয়ই কোনো ছদ্মবেশী মহাপুরুষ ভাবিয়া, তাঁহারা আর কিছু বলিতে সাহস পাইলেন না। আগন্তুক আবার একটু দৃঢ়কণ্ঠে বলিলেন, “গ্রন্থি দিতে বিরত হইলে কেন?”
বেশ একটু নরম সুরে তাঁহাদের এক জন প্রকাশ করিয়া ফেলিলেন, “পৈতাটা পাক লাগিয়া জড়াইয়া গিয়াছে, আমরা খুলিতে পারিতেছি না।”
মহাপুরুষ। পৈতায় পাক লাগিলে কীরূপে খুলিতে হয়?
উত্তর। (সবিস্ময়ে) গায়ত্রী জপ ক’রে!
ব্রহ্মচারী লোকনাথের মুখে এই কথা শুনিয়া তাঁহারা হতভম্ব হইলেন। এবং নিজদিগকে বড়োই বিব্রত বোধ করিতে লাগিলেন,—কী উত্তর যে দিবেন, তাহা ঠিক করিয়া উঠিতে পারিলেন না। তাঁহাদের তখনকার অবস্থাঞ্জট বড়োই সংকটজনক হইয়া উঠিল। গায়ত্রী ঠিকমত উচ্চারিত হইলে, সুতার পাক খুলিবে—ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণত্ব টিকিবে! আর গায়ত্রীর অশুদ্ধ উচ্চারণে, পাকও খুলিবে না, ব্রাহ্মণত্বের বড়াইও টিকিবে না। অবশেষে তাঁহারা নিজেদের নতি স্বীকার করিলেন এবং তাঁহাদের একজন বিনীতভাবে ও কাতরকণ্ঠে আগন্তুককে বলিলেন, “আমরা তেমন ভরসা পাইতেছি না। দয়া করিয়া আপনি যদি পৈতার পাকটা খুলিয়া দেন, তবে বড়োই উপকার হয়।”
ব্রহ্মচারী লোকনাথের পদোন্নতি হইল,—তিনি বর্ণশ্রেষ্ঠর আসরে ‘তুই’ হইতে ‘আপনি’ পর্যায়ে উঠিলেন। তখন ব্রাহ্মণদিগকে পৈতার দুই মাথা আসতে আসতে টানিতে বলিয়া নিজে স্বয়ং পৈতার উপর গায়ত্রী জপ করিয়া করতালি দিলেন আর সঙ্গে সঙ্গে পৈতার পাক খুলিয়া গেল—সূত্র সরল হইল।
‘শ্রীশ্রীলোকনাথ ব্রহ্মচারী’
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত -
প্রণয় সেন
ব্রাহ্মণদের এই হুমকিতে মহাপুরুষ লোকনাথ ঈষৎ হাসিভাব দেখাইলেন এবং বলিলেন, “কেন, আমি ছুঁলে কি তোমাদের জাতি যাবে নাকি?”
ব্রাহ্মণেরা পাগলের এই আস্পর্ধা দেখিয়া ক্রুদ্ধ হইলেন এবং তাহাদের মধ্যে একজন বলিলেন, “জাতি যাবে না তো কী? তুই কী জাত না কী জাত তা কে জানে?” অবস্থা চরমে উঠিল। এবার প্রতিক্রিয়া। মহাপুরুষ ব্রাহ্মণদের জাতির বড়াই দেখিয়া হাসিলেন এবং মৃদুস্বরে বলিলেন, “তোমরা কোন্ গোত্র?” পাগলের মুখে এই অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে ব্রাহ্মণগণ অপ্রতিভ হইয়া একে অন্যের মুখের দিকে তাকাইতে লাগিলেন এবং ইহাদের অন্যতম সুর নামাইয়া উত্তর করিলেন, “আমরা কাশ্যপ গোত্র।”
ব্রহ্মচারী বাবা এবার বলিতে লাগিলেন, “কাশ্যপ-অবসর-নৈ–ধ্রুব-প্রবর।” যাঁহাকে কিছুক্ষণ পূর্বে সমাজের অস্পৃশ্য নীচ বা অনার্য জাতি-সম্ভূত ভাবিয়া ব্রাহ্মণগণ নিজদিগকে বর্ণশ্রেষ্ঠ বলিয়া গর্ব প্রকাশ করিতেছিলেন, সেই হীন ও পতিতের মুখে নিজেদের গোত্র-পতিতের নাম শুনিয়া তাঁহারা চমকিয়া উঠিলেন। মহাপুরুষ লোকনাথ তাঁহাদের তখনকার ভাব দেখিয়া আরও বলিতে লাগিলেন, “কী থামলে কেন? গ্রন্থি দাও না?”
পাগলের এই উক্তিতে তাঁহাদের চৈতন্যোদয় হইল,—আগন্তুক নিশ্চয়ই কোনো ছদ্মবেশী মহাপুরুষ ভাবিয়া, তাঁহারা আর কিছু বলিতে সাহস পাইলেন না। আগন্তুক আবার একটু দৃঢ়কণ্ঠে বলিলেন, “গ্রন্থি দিতে বিরত হইলে কেন?”
বেশ একটু নরম সুরে তাঁহাদের এক জন প্রকাশ করিয়া ফেলিলেন, “পৈতাটা পাক লাগিয়া জড়াইয়া গিয়াছে, আমরা খুলিতে পারিতেছি না।”
মহাপুরুষ। পৈতায় পাক লাগিলে কীরূপে খুলিতে হয়?
উত্তর। (সবিস্ময়ে) গায়ত্রী জপ ক’রে!
ব্রহ্মচারী লোকনাথের মুখে এই কথা শুনিয়া তাঁহারা হতভম্ব হইলেন। এবং নিজদিগকে বড়োই বিব্রত বোধ করিতে লাগিলেন,—কী উত্তর যে দিবেন, তাহা ঠিক করিয়া উঠিতে পারিলেন না। তাঁহাদের তখনকার অবস্থাঞ্জট বড়োই সংকটজনক হইয়া উঠিল। গায়ত্রী ঠিকমত উচ্চারিত হইলে, সুতার পাক খুলিবে—ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণত্ব টিকিবে! আর গায়ত্রীর অশুদ্ধ উচ্চারণে, পাকও খুলিবে না, ব্রাহ্মণত্বের বড়াইও টিকিবে না। অবশেষে তাঁহারা নিজেদের নতি স্বীকার করিলেন এবং তাঁহাদের একজন বিনীতভাবে ও কাতরকণ্ঠে আগন্তুককে বলিলেন, “আমরা তেমন ভরসা পাইতেছি না। দয়া করিয়া আপনি যদি পৈতার পাকটা খুলিয়া দেন, তবে বড়োই উপকার হয়।”
ব্রহ্মচারী লোকনাথের পদোন্নতি হইল,—তিনি বর্ণশ্রেষ্ঠর আসরে ‘তুই’ হইতে ‘আপনি’ পর্যায়ে উঠিলেন। তখন ব্রাহ্মণদিগকে পৈতার দুই মাথা আসতে আসতে টানিতে বলিয়া নিজে স্বয়ং পৈতার উপর গায়ত্রী জপ করিয়া করতালি দিলেন আর সঙ্গে সঙ্গে পৈতার পাক খুলিয়া গেল—সূত্র সরল হইল।
‘শ্রীশ্রীলোকনাথ ব্রহ্মচারী’
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত -
প্রণয় সেন
0 comments :
Post a Comment