ধর্ম ও অধর্ম


মহাভারতের যুদ্ধ চলছে!! ধর্ম ও অধর্মের যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ,,চারিদিকের মাটি রক্তাক্ত,,কান্নার রোল,,বিধ্বংসী এই যুদ্ধ করতে করতে আর না যেনো আরও কতো মানুষের প্রাণ যাবে, এইসব ভাবতে ভাবতে অর্জুন সাময়িক সময়ের জন্যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন!! তিনি পার্থসারথি তথা শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন,
ওহে পার্থসারথি!! আমি ক্লান্ত অনুভব করছি, তুমি একটু অপেক্ষা করো, আমি গঙ্গায় দুটো ডুব দিয়ে আসি, এতো হত্যা করছি,,যদি একটুও পাপস্খলন ঘটে,,তাও সার্থক!!!

দেখুন তো, কি অদ্ভুত মায়া,,গঙ্গা, যমুনা,সরস্বতী--ত্রিবেণী যাঁর চরণাশ্রিত, তাঁর পাদপদ্ম স্পর্শ করলেই পৃথিবীর সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়,, তাঁকে না চিনে, তাঁকে না বুঝেই অর্জুন চলেছেন, গঙ্গা নাইতে!!!
শ্রীকৃষ্ণ মনে মনে ভাবতে লাগলেন,,,,বন্ধু, তুমি আমায় চেনো না!!! মৃদু হেসেই মনে মনে বলতে লাগলেন,,
আচ্ছা বেশ!! অর্জুন, তোমার সাথে আজ একটু মশকরা করা যাক্!!! একটু লীলা হোক আজ!!
মুহূর্তের মধ্যেই শ্রীকৃষ্ণ বিছিয়ে দিলেন এক মায়াজাল!! ঘটে গেলো এক অদ্ভুত ঘটনা!!
অর্জুন তাঁর স্নান সেরে, রথের সামনে গিয়ে পার্থসারথির দেখা না পেয়ে রথে বসে সখার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলেন। ইতিমধ্যে, দু-জন ব্যক্তি এক শবদেহ ঘাটে নিয়ে এলেন, দাহ করবেন বলে; কিন্তু কাঠ জোগাড় না হলে দাহকার্য সম্পন্ন হবে কি করে? এদিকে কারোরই শবের সাথে একাকী থাকার মতো সাহস নেই!! তারা অর্জুনকে অনুরোধ করলেন শবদেহকে সাময়িক সময়ের জন্য দেখভাল করতে এবং অর্জুন রাজীও হয়ে গেলেন!! তারপর তারা অনুমতি নিয়ে বিদায় নিলেন, কাঠ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে!!
নদীর সামনেই ঘোর জঙ্গল!! এক জীর্ণ-শীর্ণ শেয়াল ঐ মৃতদেহটিকে দেখতে পেয়ে, সেটির কাছে এসে কিছু একটা পর্যালোচনা করে ফিরে যেতে লাগলো,,রাস্তায় সেই শেয়ালটির আর এক বন্ধু শেয়ালের সাথে দেখা!! তারা গল্প করতে লাগলো!!
আর অর্জুনের এক বিশেষ ক্ষমতা ছিল যে, তিনি পশুপাখিদের ভাষা বুঝতে পারতেন!! তাই শেয়াল দুটোর কথা তিনি মন দিয়েই শুনছিলেন।
বন্ধু শেয়াল বলছে,, কিরে? তোর সামনে এতো সুন্দর খাবার পড়ে আছে,,তুই না খেয়ে ফিরে যাচ্ছিস্ কেনো??একেই তোর  যেমন শরীর, না খেয়ে থাকলে তুই তো আর বাঁচবি নারে!!  তখন সেই জীর্ণ শেয়াল বলছে,
ওরে!! আমি তো খেতেই গিয়েছিলাম রে ভাই,,কিন্তু খেতে পারলাম না, কেনো জানিস? আমি প্রথমে ঐ লোকটির পা শুঁকলাম, দেখলাম লোকটি চরণ কখনও কোনো তীর্থস্থানে অবতরণ করে নি,,হাত টা শুঁকে দেখলাম, লোকটি কখনও কিছু দান করেনি, লোকটির বুক শুঁকে দেখলাম, লোকটি কখনও কোনো সাধুকে আলিঙ্গন করেনি, মুখ ও কানটিও শুঁকেও দেখলাম, লোকটি কখনও জীবনে হরিনাম নেয়নি এবং শোনেও নি; এই রকম পাপীকে আমি ভক্ষণ করতে পারবো না।
একথা শুনে বন্ধু শেয়াল বলছে, ওরে!! এর চেয়েও বড়ো পাপী কে জানিস্? যে ঈশ্বরকে সন্নিকটে পেয়েও চিনতে না পারে,,,তার মতো পাপী এই দুনিয়াতে নেই,, ঐ দেখ্  রথে বসে আছে!!
অর্জুনের এইসব কথা শুনে অশ্রুধারা বইতে লাগলো এবং নিজের ত্রুটি বুঝতে পারলেন,, সেই সময়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সামনে অবতীর্ণ হতেই,,,আছড়ে পড়লেন শ্রীকৃষ্ণের চরণে এবং বললেন,,
হে প্রভু, আমার গুরুতর অন্যায় হয়েছে, আপনি আমার সামনে থাকতেও আমি আপনাকে চিনতে পারিনি, আপনার চরণেই ত্রিবেণী বিদ্যমান, আপনার চরণাশ্রিত সকল ভক্ত, সমস্তরকম বিপদ থেকে উদ্ধার পান,,,,,হে শ্রীকৃষ্ণ!! আমায় ক্ষমা করুন ।। তারপর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে আলিঙ্গন করলেন ।।


আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।

Share on Google Plus

About Indian Monk - Pronay Sen

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.

0 comments :

Post a Comment