শ্রীশ্রীবিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী রচনাবলী


সদ্‌গুরুর আশ্রয় পাওয়ার অর্থ কি?
ভগবৎ শক্তির আশ্রয় পাওয়া।
যত লোক সৃষ্টিকাল হইতে সদ্‌গুরুর আশ্রয় পাইয়াছে সকলে কি একই শক্তি পাইয়াছে?
ভগবান এক, সুতরাং তাঁহার শক্তিও এক। প্রকার ভিন্ন ভিন্ন হইতে পারে। একটা ইঞ্জিন তাহার সঙ্গে একশত যন্ত্রের যোগ। কেহ করাতের কার্য্য করে, কেহ ঢালাই কার্য্য করে, কেহ নানা লৌহের কার্য্য করে যন্ত্রালয়ে। বহির্জগতে এক শক্তি তাহাতে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত, বসন্ত প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন ঋতু হইতেছে। এক শক্তি বনমধ্যে নানা বৃক্ষে নানাপ্রকার ফুল ফল নানা রস নানা বর্ণ। এক শক্তি জনসমাজে দেশ কাল পাত্র ভেদে পণ্ডিত ধার্ম্মিক বীর দাতা মূর্খ রাজা প্রজা ইত্যাদি।
মনোহনুকূলে নতু চক্ষু পীড়নে সময়কারঃ শিরোগ্রীবো ধারয়ন্‌ অচলঃ স্থিরঃ ইত্যাদি।
বঙ্গদেশ তপস্যার পক্ষে উপযুক্ত স্থান নহে। হিমালয় সিন্ধু কাবেরী নর্ম্মদা গোদাবরী প্রভৃতি নদী তীর। গঙ্গা যমুনার মধ্যবর্ত্তী স্থান।


পূর্ব্ব পূর্ব্ব জন্মে ইষ্ট দেবতা যে ভাবে যে মূর্ত্তিতে সাধিত হন, সাধন সিদ্ধির পূর্ব্বে সেই দেবতা স্বপ্নে দর্শন দিয়া আকর্ষণ করেন। পূর্ব্ব পূর্ব্ব যুগে সাক্ষাৎভাবে আসিয়া পরিচয় দিতেন। কলিতে সাক্ষাৎ দর্শন দিয়া থাকেন।
সমস্ত জীবে ব্রহ্ম শক্তি হিরণ্যগর্ভ।
দেবতা যাহা লোকে পূজা করে তাহা পরব্রহ্ম।
প্রত্যেক উপাসকের এই পূজা। (স্বপ্নে ইষ্ট দেবতা দর্শন দিয়া আকর্ষণ করেন) ইষ্ট দেবতা প্রসন্ন হইলে তার পরে ব্রহ্মজ্ঞান, তার পরে যোগ, তার পরে ভক্তি। ক্রমে রামচন্দ্র হইতে সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডের তত্ত্ব প্রকাশ হইবে। রামই ব্রহ্ম, তাহা হইতে মায়া, মায়া হইতে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব সমস্ত জগতের সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয়। ঐ সকল তত্ত্ব প্রত্যক্ষ হইয়া মায়া হইতে মুক্তি পাইয়া পরাভক্তি লাভ হয়। সেই পঞ্চম পুরুষার্থ। গোলোক, বৃন্দাবন, কৈলাস, এই নিত্যধামে নিত্য দেবতা বিরাজমান। রাধাকৃষ্ণ, রাম-সীতা, হরগৌরী, একই দেবতা একই বিগ্রহ। সাধকের ভাব অনুসারে ভিন্নরূপে দর্শন। যেমন কোন খৃস্টান ভক্ত কালীঘাটের কালী ও দক্ষিণেশ্বরের আনন্দময়ী মূর্ত্তি দেখিয়া যিশুখৃষ্টরূপ দর্শন করিয়াছিলেন।
পঞ্চ উপাসনা করিয়া নিজের ইষ্টদেবের পূজা করিতে হয়। পঞ্চ উপাসনা, মায়া হইতে মুক্ত হইয়া ইষ্টদেবে ভক্তি ভাবের জন্য। এজন্য প্রত্যেক সাধককে পঞ্চ উপাসনা প্রতিদিন করিয়া স্বীয় ইষ্ট দেবতার পূজা করিতে হয়।
রামাৎ সম্প্রদায় তুলসীদাসের সময় হইতে।
(ঋষিরা) পঞ্চ উপাসনা করিয়া তার সঙ্গে এই সাধন করিতেন। পুরাণ ঋষিদিগের সময় যাগ যজ্ঞ সমস্ত করিয়া তাহার সঙ্গে এই সাধন করিতেন।
যাঁরা স্বপ্নে দেবতা দর্শন করেন কি আলাপ করেন তাঁদের আর জন্ম হয় না। কেবল শাস্ত্র বাক্যে বিশ্বাস না হওয়াতে স্বপ্ন দর্শন মাত্র ফল পায় না।
মহাভারতে একটি আখ্যায়িকা আছে যে কলির রাজত্ব আরম্ভ হইলে ধার্ম্মিকগণ ক্লেশ পাইতে লাগিলেন। অধার্ম্মিক সুখে আছে। কলিকে যে মান্য করিবে, সেই সুখে থাকিবে। কিন্তু সময়ে সময়ে যখন কলির প্রজাগণ অত্যন্ত পাপাচরণ করিবে, তখন ভগবান প্রথমে সাবধান করিয়া দিবেন, তাহাতে ক্ষান্ত না হইলে নানাপ্রকার শাস্তি দুর্ভিক্ষ মহামারী প্রভৃতি পাঠাইবেন। তাহাতেও যদি নিবৃত্ত না হয়, তবে দুষ্টদিগকে ধ্বংস করিবার জন্য, সাধুদিগকে রক্ষা করিবার জন্য অবতীর্ণ হইবেন।
শ্রীশ্রীবিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী রচনাবলী (১ম খণ্ড)


আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুনঃপ্রচারে বিনীত
     প্রণয় সেন

Share on Google Plus

About Indian Monk - Pronay Sen

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.

0 comments :

Post a Comment