মানুষের চিন্তাধারা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়? মাঝে মাঝে মনে এমন সব অবাঞ্ছিত চিন্তার উদয় হয় যাকে মন এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু তবু মন না চাইলেও চিন্তাগুলো জাগতে থাকে। আবার এমনও কিছু চিন্তা মনের মধ্যে মাথাচাড়া দেয় যা মন চায় আসুক কিন্তু বাস্তবে সেগুলো আসে না। লক্ষ্য করবে, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বই-খাতা হাতে নিয়ে পড়তে বসেছে ঠিকই কিন্তু মন পড়ে আছে খেলার মাঠে অথবা রান্নাঘরের চার দেওয়ালে।
মানুষের মনের চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রিত হয় মূলতঃ তার সহজাত সংস্কার ও আরোপিত সংস্কারের দ্বারা। আরোপিত সংস্কার আবার দু’রকমের
(১) পরিবেশের প্রভাবজাত সংস্কার ও (২) বাইরের সূত্র থেকে অধ্যারোপিত সংস্কার। সাধারণতঃ মানুষ যে পরিবেশে বাস করে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে তার মনের ওপর। প্রতিবেশীদের চা পান করতে দেখে ও চায়ের গন্ধ বাতাসে ভেসে নাকে এসে লাগলে অন্যেরও চা পানের ইচ্ছা জাগে। এটা হ’ল পরিবেশের প্রভাব। আবার একই জিনিস বারবার শুনতে শুনতে মনের ওপর তার প্রভাব পড়ে। এটা হ’ল সংস্কারের অধ্যারোপ।
মানুষ সাধারণতঃ যে ধরণের কাজ করে, তদনুযায়ী তার সংস্কার তৈরী হয়। আর মৃত্যুর পর সেই অর্জিত সংস্কার অনুযায়ী সে নোতুন শরীর পায়। কুকুরের মত কাজ করলে কুকুরের মত শরীর পাবে আর সেই ধরণের জীবের চিন্তাধারা অবশ্যই কুকুরের মত হবে। এটা হ’ল জন্মগত সংস্কার। চিন্তাধারা পুরোপুরি অমানবোচিত না হ’লে মৃত্যুর পর মানুষ আবার মানব শরীর নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কিছু অধ্যারোপিত সংস্কারের ক্ষেত্রে তার চিন্তাধারা নিম্নকোটি জীবের মত হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যে পরিবারের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি করে থাকে, সেই পরিবারের শিশুরাও ঝগড়াটে স্বভাবের হয়ে থাকে। বিশেষ বিশেষ ধর্মাবলম্বীরা সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা বদ্ধমূল করে দেয় যে অমুক অমুক ধরণের কাজ করলে পাপ হয় আর অমুক অমুক ধরণের কাজ করলে পুণ্য হয়। এই ধরণের আরোপিত সংস্কারকে অধ্যারোপণ বলা হয়ে থাকে।
পরিবেশের সঙ্গে মানসিকতার আরেক ধরণের সম্পর্ক থাকে—ভয়ের সম্পর্ক। ছোট্ট শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পরমুহূর্ত্তেই কেঁদে ওঠে। শিশু কাঁদলেই তার অভাব পূর্ণ হয়ে যায়। সে লক্ষ্য করে, কেঁদে উঠলেই হাতে চুড়ি-পরা, সিঁথিতে সিঁদুর-পরা ও লম্বা কেশযুক্ত এক মহিলা তার কাছে ছুটে আসে ও তাকে দুধ খাওয়ায়। শিশু এইভাবে বুঝতে পারে যে একটু কেঁদে উঠলেই তার যাবতীয় অভাব পূরণ হয়ে যায়। মানুষের মুখ থেকে ‘ম’ ধ্বনিটি অনায়াসেই উচ্চারিত হয়। তাই ছোট্ট শিশুটি যত্নপরায়ণা নারীকে ‘মা’, ‘মা’ বলে ডাকতে থাকে। অভাব পূরণের জন্যে নবজাত শিশুর এই কান্না কি অন্যায়?
সেই শিশুই যখন কিছুটা বড় হয়ে ওঠে তখন সে খেলনা চায়, বাড়ীর বাইরে বেরোতে চায়। এগুলো কি দণ্ডনীয় অপরাধ? যখন সে কৈশোরে পদার্পণ করে তখন সে কিছু রোমান্টিক কাজ করতে চায়, গোয়েন্দা-কাহিনী পড়তে চায়। বয়স যখন আরো একটু বেড়ে যৌবনে পা দেয়, তার চিন্তাধারাও পাল্টে যায়। প্রৌঢ়তে পৌঁছে পরিবারের কথা বেশী করে ভাবতে থাকে। সেই সঙ্গে এটাও ভাবতে থাকে যে মৃত্যুর পর তার জমি-জায়গার উত্তরাধিকারী কে হবে। আর ভাবে, জীবন ভোর কোন ভাল কাজ তো করা হয়নি, এখন তাই কিছুটা সাধন-ভজন, পূজা-পাঠ করা উচিত। এসব চিন্তাভাবনা খুবই স্বাভাবিক।
শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তির ‘কৃষ্ণতত্ত্ব ও গীতাসার’ গ্রন্থ
ভারতের সাধক ও সাধিকা
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নূতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নূতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
ভারতের সাধক ও সাধিকা
পুণঃপ্রচারে বিনীত
প্রণয় সেন
প্রণয়
মানুষের মনের চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রিত হয় মূলতঃ তার সহজাত সংস্কার ও আরোপিত সংস্কারের দ্বারা। আরোপিত সংস্কার আবার দু’রকমের
(১) পরিবেশের প্রভাবজাত সংস্কার ও (২) বাইরের সূত্র থেকে অধ্যারোপিত সংস্কার। সাধারণতঃ মানুষ যে পরিবেশে বাস করে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে তার মনের ওপর। প্রতিবেশীদের চা পান করতে দেখে ও চায়ের গন্ধ বাতাসে ভেসে নাকে এসে লাগলে অন্যেরও চা পানের ইচ্ছা জাগে। এটা হ’ল পরিবেশের প্রভাব। আবার একই জিনিস বারবার শুনতে শুনতে মনের ওপর তার প্রভাব পড়ে। এটা হ’ল সংস্কারের অধ্যারোপ।
মানুষ সাধারণতঃ যে ধরণের কাজ করে, তদনুযায়ী তার সংস্কার তৈরী হয়। আর মৃত্যুর পর সেই অর্জিত সংস্কার অনুযায়ী সে নোতুন শরীর পায়। কুকুরের মত কাজ করলে কুকুরের মত শরীর পাবে আর সেই ধরণের জীবের চিন্তাধারা অবশ্যই কুকুরের মত হবে। এটা হ’ল জন্মগত সংস্কার। চিন্তাধারা পুরোপুরি অমানবোচিত না হ’লে মৃত্যুর পর মানুষ আবার মানব শরীর নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কিছু অধ্যারোপিত সংস্কারের ক্ষেত্রে তার চিন্তাধারা নিম্নকোটি জীবের মত হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যে পরিবারের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি করে থাকে, সেই পরিবারের শিশুরাও ঝগড়াটে স্বভাবের হয়ে থাকে। বিশেষ বিশেষ ধর্মাবলম্বীরা সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা বদ্ধমূল করে দেয় যে অমুক অমুক ধরণের কাজ করলে পাপ হয় আর অমুক অমুক ধরণের কাজ করলে পুণ্য হয়। এই ধরণের আরোপিত সংস্কারকে অধ্যারোপণ বলা হয়ে থাকে।
পরিবেশের সঙ্গে মানসিকতার আরেক ধরণের সম্পর্ক থাকে—ভয়ের সম্পর্ক। ছোট্ট শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পরমুহূর্ত্তেই কেঁদে ওঠে। শিশু কাঁদলেই তার অভাব পূর্ণ হয়ে যায়। সে লক্ষ্য করে, কেঁদে উঠলেই হাতে চুড়ি-পরা, সিঁথিতে সিঁদুর-পরা ও লম্বা কেশযুক্ত এক মহিলা তার কাছে ছুটে আসে ও তাকে দুধ খাওয়ায়। শিশু এইভাবে বুঝতে পারে যে একটু কেঁদে উঠলেই তার যাবতীয় অভাব পূরণ হয়ে যায়। মানুষের মুখ থেকে ‘ম’ ধ্বনিটি অনায়াসেই উচ্চারিত হয়। তাই ছোট্ট শিশুটি যত্নপরায়ণা নারীকে ‘মা’, ‘মা’ বলে ডাকতে থাকে। অভাব পূরণের জন্যে নবজাত শিশুর এই কান্না কি অন্যায়?
সেই শিশুই যখন কিছুটা বড় হয়ে ওঠে তখন সে খেলনা চায়, বাড়ীর বাইরে বেরোতে চায়। এগুলো কি দণ্ডনীয় অপরাধ? যখন সে কৈশোরে পদার্পণ করে তখন সে কিছু রোমান্টিক কাজ করতে চায়, গোয়েন্দা-কাহিনী পড়তে চায়। বয়স যখন আরো একটু বেড়ে যৌবনে পা দেয়, তার চিন্তাধারাও পাল্টে যায়। প্রৌঢ়তে পৌঁছে পরিবারের কথা বেশী করে ভাবতে থাকে। সেই সঙ্গে এটাও ভাবতে থাকে যে মৃত্যুর পর তার জমি-জায়গার উত্তরাধিকারী কে হবে। আর ভাবে, জীবন ভোর কোন ভাল কাজ তো করা হয়নি, এখন তাই কিছুটা সাধন-ভজন, পূজা-পাঠ করা উচিত। এসব চিন্তাভাবনা খুবই স্বাভাবিক।
শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তির ‘কৃষ্ণতত্ত্ব ও গীতাসার’ গ্রন্থ
ভারতের সাধক ও সাধিকা
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নূতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নূতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
ভারতের সাধক ও সাধিকা
পুণঃপ্রচারে বিনীত
প্রণয় সেন
প্রণয়
0 comments :
Post a Comment