“কালে লাখো বিবেকানন্দ জন্মাবে”—এই দৈববাণীর গূঢ়ার্থ কী?
অবতার-লীলা বোঝা নিশ্চয়ই সুকঠিন। কিন্তু তাই বলিয়া বোঝা যায় না বা যাবেও না—এইরূপ পৌরাণিক অর্থাৎ মনঃকল্পিত ভক্তির প্রশ্রয় এই যুগে গ্রহণযোগ্য নহে। কারণ ইহা মানবিক যুক্তি বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যুগ। বর্তমানে সমাজব্যবস্থার সমানাধিকার, বিজ্ঞানচর্চার সমানাধিকার, মানবীয় সমানাধিকার—এই বিভিন্ন অধিকারের সুলভ্যতা পৃথিবীর নর-নারী, যুবক-যুবতীর মৌলিক দাবি। এই দাবি হইতে বঞ্চিত হইলে পৃথিবীব্যাপী বিদ্রোহ অবশ্যম্ভাবী। অতএব এই দাবি চাপিতে যাইলে হিতে বিপরীতই হইবে। শুধু ধর্মে নাস্তিকতা নয় পরন্তু সামাজিক নাস্তিকতা, বৈজ্ঞানিক নাস্তিকতা, শিক্ষার নাস্তিকতা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিবেই বা দিতেওছে।
নাস্তিকতা তাহাকেই বলে যাহা আমি মানুষ হইয়া জন্মিয়াও মানি না বা সেইরূপ জীবন নিয়ন্ত্রণ করি না। সামাজিক নাস্তিকতা তাহা হইলে দাঁড়াইতেছে যে উন্নততর সমাজ ব্যবস্থা অগ্রাহ্য করিয়া জীবন-যাত্রা যথেচ্ছাচারভাবে নির্বাহ করা। সেইরূপ বৈজ্ঞানিক নাস্তিকতার অর্থ এইভাবে দাঁড়ায় যে বিজ্ঞানপ্রসূত যাহা সকল মানব কল্যাণে নিয়োজিত হইতে পারে তাহার অস্বীকার। আবার শিক্ষার নাস্তিকতার অর্থঃ যে প্রকৃত শিক্ষায় ব্রতী হইলে আমার মধ্যে যে মনুষ্যোচিত সদ্গুণরাশির উন্মেষ ঘটিতে পারে তাহার উৎসমুখ রুদ্ধ করিয়া রাখা। ধর্মে নাস্তিকতা কী তাহা আবার উপরোক্ত নাস্তিকতার হাত হইতে মুক্ত না হইলে বোঝা নিশ্চয়ই সুকঠিন।
পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয় লব্ধ সূর্যকে চলনশীল বলিয়াই মনে হয়। কিন্তু বিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞানে সূর্যের গতি অস্বীকৃত হয়। এক্ষেত্রে আমরা মানুষ হইয়া কোনটা স্বীকার করিব? নিশ্চয়ই বিজ্ঞান-পরিমার্জিত জ্ঞানকেই উচ্চতর সত্য বলিয়া নিঃসন্দিগ্ধ হইব। যেমন শিশুর কথা বয়োবৃদ্ধ পিতামাতা মানে না, সেইরূপ উচ্চ উচ্চ বিজ্ঞান-লব্ধ জ্ঞানকে পিতামাতা হিসাবে ধরিলে পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানকে অবশ্য শিশু বলিতে হইবে। পৃথিবীর নরনারীর জ্ঞান বিকশিত হইয়া, কতদূর উচ্চ সীমায় উঠিতে পারে, তাহাদের অন্তর্জগতের প্রশ্ন ও বিশ্বাস এবং তৎপরে সাধনলব্ধ সিদ্ধিতে উপনীত হওয়ার উপরেই নির্ভর করে।
স্কুল কলেজে শিক্ষা লইতে হইলে শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অধ্যাপক, অধ্যাপিকার উপর বিশ্বাস বা শ্রদ্ধাসম্পন্ন না হইলে শিক্ষা গ্রহণ অসম্পূর্ণই থাকিয়া যায়। যেমন শৈশবে মাতা, পিতা অভিভাবকের উপর শ্রদ্ধাসম্পন্ন না হইলে দেখিতে মানুষ হইয়াও মনুষ্যেতর প্রাণী জগতেরই একজন হইয়া থাকিতে হইবে। প্রাথমিক অবস্থা থেকেই শিক্ষার বা জ্ঞানের উন্মেষের প্রয়োজন আছে। সেইরূপ যে কোনও অপরা বিদ্যায় পারদর্শী হইতে হইলে গুরুর উপর বিশ্বাসের একান্ত প্রয়োজন।
একটি চলতি কথা আছে—“যার যেমন ভাব তার তেমন লাভ।” এ কথার অর্থ এইভাবে লইলে যথা “যার জ্ঞান যতটুকু বিকশিত ঠিক ততটুকুই সে এই জগতকে গ্রহণ করে; তার বেশি সে কখনই পারে না বা তাহার গ্রহণ করবার সামর্থ্য নাই, “মনে হয় উপরোক্ত প্রবাদ বাক্যটির মর্যাদা রক্ষিত হয়। একটি অপরিণত শিশু বা বালকের নিকট বিজ্ঞানের যেমন কোনও মূল্যই নেই তেমনি মনুষ্যেতর প্রাণিজগতের নিকট মনুষ্য সমাজের ক্রিয়াকলাপের অর্থ নিশ্চয়ই অবোধ্য বা অস্পষ্টই থাকিয়া যায়।
স্বামী পবিত্রানন্দের ‘এক ও একতা’
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত -
প্রণয় সেন
অবতার-লীলা বোঝা নিশ্চয়ই সুকঠিন। কিন্তু তাই বলিয়া বোঝা যায় না বা যাবেও না—এইরূপ পৌরাণিক অর্থাৎ মনঃকল্পিত ভক্তির প্রশ্রয় এই যুগে গ্রহণযোগ্য নহে। কারণ ইহা মানবিক যুক্তি বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যুগ। বর্তমানে সমাজব্যবস্থার সমানাধিকার, বিজ্ঞানচর্চার সমানাধিকার, মানবীয় সমানাধিকার—এই বিভিন্ন অধিকারের সুলভ্যতা পৃথিবীর নর-নারী, যুবক-যুবতীর মৌলিক দাবি। এই দাবি হইতে বঞ্চিত হইলে পৃথিবীব্যাপী বিদ্রোহ অবশ্যম্ভাবী। অতএব এই দাবি চাপিতে যাইলে হিতে বিপরীতই হইবে। শুধু ধর্মে নাস্তিকতা নয় পরন্তু সামাজিক নাস্তিকতা, বৈজ্ঞানিক নাস্তিকতা, শিক্ষার নাস্তিকতা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিবেই বা দিতেওছে।
নাস্তিকতা তাহাকেই বলে যাহা আমি মানুষ হইয়া জন্মিয়াও মানি না বা সেইরূপ জীবন নিয়ন্ত্রণ করি না। সামাজিক নাস্তিকতা তাহা হইলে দাঁড়াইতেছে যে উন্নততর সমাজ ব্যবস্থা অগ্রাহ্য করিয়া জীবন-যাত্রা যথেচ্ছাচারভাবে নির্বাহ করা। সেইরূপ বৈজ্ঞানিক নাস্তিকতার অর্থ এইভাবে দাঁড়ায় যে বিজ্ঞানপ্রসূত যাহা সকল মানব কল্যাণে নিয়োজিত হইতে পারে তাহার অস্বীকার। আবার শিক্ষার নাস্তিকতার অর্থঃ যে প্রকৃত শিক্ষায় ব্রতী হইলে আমার মধ্যে যে মনুষ্যোচিত সদ্গুণরাশির উন্মেষ ঘটিতে পারে তাহার উৎসমুখ রুদ্ধ করিয়া রাখা। ধর্মে নাস্তিকতা কী তাহা আবার উপরোক্ত নাস্তিকতার হাত হইতে মুক্ত না হইলে বোঝা নিশ্চয়ই সুকঠিন।
পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয় লব্ধ সূর্যকে চলনশীল বলিয়াই মনে হয়। কিন্তু বিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞানে সূর্যের গতি অস্বীকৃত হয়। এক্ষেত্রে আমরা মানুষ হইয়া কোনটা স্বীকার করিব? নিশ্চয়ই বিজ্ঞান-পরিমার্জিত জ্ঞানকেই উচ্চতর সত্য বলিয়া নিঃসন্দিগ্ধ হইব। যেমন শিশুর কথা বয়োবৃদ্ধ পিতামাতা মানে না, সেইরূপ উচ্চ উচ্চ বিজ্ঞান-লব্ধ জ্ঞানকে পিতামাতা হিসাবে ধরিলে পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানকে অবশ্য শিশু বলিতে হইবে। পৃথিবীর নরনারীর জ্ঞান বিকশিত হইয়া, কতদূর উচ্চ সীমায় উঠিতে পারে, তাহাদের অন্তর্জগতের প্রশ্ন ও বিশ্বাস এবং তৎপরে সাধনলব্ধ সিদ্ধিতে উপনীত হওয়ার উপরেই নির্ভর করে।
স্কুল কলেজে শিক্ষা লইতে হইলে শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অধ্যাপক, অধ্যাপিকার উপর বিশ্বাস বা শ্রদ্ধাসম্পন্ন না হইলে শিক্ষা গ্রহণ অসম্পূর্ণই থাকিয়া যায়। যেমন শৈশবে মাতা, পিতা অভিভাবকের উপর শ্রদ্ধাসম্পন্ন না হইলে দেখিতে মানুষ হইয়াও মনুষ্যেতর প্রাণী জগতেরই একজন হইয়া থাকিতে হইবে। প্রাথমিক অবস্থা থেকেই শিক্ষার বা জ্ঞানের উন্মেষের প্রয়োজন আছে। সেইরূপ যে কোনও অপরা বিদ্যায় পারদর্শী হইতে হইলে গুরুর উপর বিশ্বাসের একান্ত প্রয়োজন।
একটি চলতি কথা আছে—“যার যেমন ভাব তার তেমন লাভ।” এ কথার অর্থ এইভাবে লইলে যথা “যার জ্ঞান যতটুকু বিকশিত ঠিক ততটুকুই সে এই জগতকে গ্রহণ করে; তার বেশি সে কখনই পারে না বা তাহার গ্রহণ করবার সামর্থ্য নাই, “মনে হয় উপরোক্ত প্রবাদ বাক্যটির মর্যাদা রক্ষিত হয়। একটি অপরিণত শিশু বা বালকের নিকট বিজ্ঞানের যেমন কোনও মূল্যই নেই তেমনি মনুষ্যেতর প্রাণিজগতের নিকট মনুষ্য সমাজের ক্রিয়াকলাপের অর্থ নিশ্চয়ই অবোধ্য বা অস্পষ্টই থাকিয়া যায়।
স্বামী পবিত্রানন্দের ‘এক ও একতা’
আরও আধ্যাত্মিক তথ্য পেতে ও জানতে চাইলে অবশ্যই দেখুন আমাদের সকলের এই নুতন চ্যানেলটি, আর সর্বদা আনন্দে থাকুন ও আনন্দে রাখুন সকলকে : https://bit.ly/2OdoJRN
ভারতের সাধক ও সাধিকা গ্রুপের সকল সদস্যদের কাছে আমার বিনীত আবেদন,
ভারতের সকল সাধক ও সাধিকার ভাবধারা সম্প্রচার ও পুনঃপ্রচারের উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের এই নুতন ইউটিউব চ্যানেল,
আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
এটি একটি মহৎ প্রয়াস, আপনিও এর অংশীদার হোন।
পুণঃপ্রচারে বিনীত -
প্রণয় সেন
0 comments :
Post a Comment